Friday, July 25, 2008
এবং নতুনতম পুরনো পোস্ট- "ক্ষমা করো, মা!"
কতোদিন?
সেই পিচ্চিকালে মনে আছে তুমি কখনও আমাদের ছেড়ে কোথাও যেতেনা। একদিন বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখেছিলাম, তুমি আমায় ফেলে কোথায় জানি চলে যাচ্ছ। এখনও মনে আছে, অভিযোগ করে বিশাল জোরে কান্না জুড়ে দিয়েছিলাম "এ কেমন মা?!"
এখনও হাসির পাত্রী হতে হয় সেই আঠার ঊনিশ বছর আগের কথায়!
এরপর একদিন তুমি ঘরে রইলে, আমিই বের হতে শুরু করলাম। যেই লাল জামা পরে কেজি স্কুলে যেতাম, ওটার কথা নিশ্চয় তোমার এখনও মনে আছে, না মা? পিছন থেকে দেখতে ঠিক প্রজাপতির মতো লাগত। সেই থেকে শুরু, আমার প্রজাপতির মত উড়াউড়ি।
পুরনো পোস্ট ২- স্বার্থপরের পদাবলী
১৫ তারিখ রাত
...............
ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস শুনেছি
নয় নং মহা বিপদ সংকেত
পুন: পুন:বার উচ্চারিত হচ্ছে চতুর্দিকে
জলোচ্ছ্বাস ও হতে পারে
দশ কিংবা পনের ফুট উঁচু
সুরক্ষিত দুর্গে আমার বাস-
পাহাড়ের পাদদেশে
সী লেভেলের অনেক উঁচুতে
সারা শহর যখন সেদিন তলিয়ে গিয়েছিল
সেদিনও আমাদের এই দুর্গ সদৃশ দালানে- গেটতক পানি আসতে পারেনি
যাক সে কথা,
আজ ভাবছি, কি আর হবে এমন?
মোটা পুরু কাঁচের জানালা বন্ধ করে দিলাম
থাই এলুমিনিয়ামের নিশ্ছিদ্র বেষ্টনী
শীতের কাঁপুনি ধরিয়ে দেয়া হাওয়া নেই
তবু সুরক্ষার জন্য গায়ে কাঁথা জড়াই
বিদেশী কম্বলও রাখা পায়ের কাছে-
পাছে রাতে শীত বেড়ে যায়
নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিলাম রাত
হুশ হাশ শব্দে মাঝে মাঝে ঘুমে ছেদ পড়েনি তা নয়
আবার কাত ফিরে দ'চোখ বুজে স্বপ্নে ডুবি
এই তো আমি- এক নিঠুর স্বার্থপরের প্রতিচ্ছবি
পুরনো পোস্ট ১- তুমি এসেছিলে.........
তুমি এসেছিলে, অনাহূত কিংবা অপ্রত্যাশিত অতিথি হয়ে নও- অত্যন্ত প্রত্যাশিতভাবে, একেবারে ঠিক সময়টাতেই, খুব হিসেব নিকেশ করেই। তোমাকে বরন করে নেয়ার সে কি প্রচেষ্টা ছিল আমাদের। বরন টা তোমাকে ঠিক ভাবেই করেছিলাম- জীবনের ছকটাতেও নিয়মমতো লাগিয়ে দিলাম পরিবর্তনের ছোঁয়া।
প্রথম কয়েক দিন তোমায় পেয়ে খুশির অন্ত ছিল না। তুমি আর তোমার দেয়া শ্রেষ্ঠ উপহারটাকে চিরাচরিত নিয়মে কন্ঠে ধারনের প্রতিযোগিতা। এমনকি কম্পিউটার আর এম পি থ্রী প্লেয়ারেও তার সরব উপস্থিতি জানিয়ে দিল- তুমি এসেছ।
রাত জেগে তোমায় পাহারাও যে দিইনি কয়েকদিন তা নয়। অবশ্য কারনটা ছিল ভিন্ন। শুনেছি ঐ সময়টাতেই তোমার উপহারের ডালি খুলে বস- তাই লোভটা সামলাতে পারিনি-এই আর কি।
তবে প্রথম কয়েক দিনে যা হল এই ই সব......। উতসাহটা কালের পরিক্রমায় যথারীত দমে গেল। মাঝের কয়েকদিনে তো মনেই ছিল না তোমার উপস্থিতির কথা। শুধু ক্লাস, পড়া আর নিয়মিত কাজের ফাঁকে ঐ ক্লান্ত শরীরটার সুবাদে যা একটু বুঝছিলাম তাই। তোমার আগমনে জীবনের ছকে কি জানি একটা পরিবর্তন এসে গিয়েছিল বটে (তা অবশ্য পরিবেশের সাথে মিল রাখতে গিয়েই-সবাই যা করছে আমি কেন ব্যাতিক্রমী হব), কিন্তু মনে মগজে যা আনব ভেবেছিলাম তা আর আসল কই?
সব কাজতো চলেছেই আগের মতোই-ক্লাস, পড়ালেখা, টিভি দেখা, সেই সাথে নতুন যোগ হল - এই সামহোয়্যার ইনে ঢু মারা...(শুধু ঢু মারা বললে ভুল হবে বোধহয়- আবাস গড়া)।
তুমি আসার পর সময়টা কেমন তাড়াতাড়ি চলে গেল, টেরই পেলাম না। কখন ভোর হয়, আর কখন রাত, বুঝার সাধ্যি নেই। তারপর......। একদিন হঠাত টের পেলাম তোমার যাওয়ার বেলা হয়ে এল। তোমার উপস্থিতির যে আনন্দ, তার চেয়ে তোমার বিদায়বেলার উতসবের আনন্দটা অনেক বেশি। আর সেই সাথে প্রস্তুতিরও অনেক ব্যাপার থাকে।হঠাত মনে পড়ল, অনেক কাজই তো বাকি রয়ে গেল। এরপরের কাহিনী আর কি বলব- রাতদিন ঘুরাঘুরি- এখানে ওখানে, নানা রং এ সজ্জিত আর নবতর উদ্ভাবনে মেতে উঠা বিপণি বিতান গুলোয় ঢু মারার অন্তহীন প্রতিযোগিতা। ঘরের কোনটা ক্রমেই ভরে উঠল বর্ণিল সব কাগজের প্যাকেটে। আর ঘরের আরেক কোণে চুপটি মেরেই বসে রইলে তুমি, অযত্নে আর অবহেলায়......। সেই সাথে তোমার ঐ শ্রেষ্ঠ উপহার...... আবার ধুলো মলিন।
হঠাত দেখি তোমার যাওয়ার সময় হয়ে এল ...। আজ যাব কি কাল যাব করে একটা দিন রয়েই গেলে আমাদের মাঝে। জানিনা কি এক অভিমান নিয়ে আজ তুমি চলে যাচ্ছ...।
তখনি মনে হল, -" আরে একি! এভাবেই চলে যাবে তুমি। আয় হায়, তোমার জন্য তো কিছুই করা হল না......।" মনটা কিছুতেই মানতে চাচ্ছে না তুমি এভাবে চরম অবহেলায় আর অযত্নে চলে গিয়ে বিদায় নেবে অ-নে-ক দিনের জন্য।
যাবেই যখন আর তো রেখে দেয়ার উপায় দেখিনা। তোমার সময় যে শেষ। নিজেরই চুল টানতে ইচ্ছে করছে আজ। কেন যে আগে একটি বার মনে হল না...।
আচ্ছা, তুমি আবার আসবে তো আমার জীবনে?? আচ্ছা, তোমার মনে আছে, গতবার যখন তুমি এসেছিলে আমাদের মাঝে আর ও কতজন ছিল। আজ অনেকেই নেই, তোমায় আর একটিবার দেখে যেতে পারল না। ভাবতেই মনটা কি এক অজানা আতংকে শিহরিত হয়ে উঠে......... তোমায় আরও এক বার দুচোখ ভরে দেখতে পাব তো? নাকি এক বুক অভিমান নিয়ে যাওয়ার বেলায় আঁড়ি পেতে দিলে?
যদি তাই হয়, তবে এই পাহাড় সমান পাপ নিয়ে আমার মুক্তির আর কোনো উপায় আছে?
যাওয়ার বেলায় একটিবার দয়া করে মুখ ঘুরিয়ে বলে যাও। আচ্ছা তোমার কি চোখ আছে? একবার ফিরেই দেখ না - আমার চোখের অশ্রুর দিকে তাকিয়েও কি আমার প্রশ্নের জবাব দিবে না?
............
তুমি তো পবিত্র জানতাম। এতো নিষ্ঠুর হতে কিভাবে পারলে, হে রমজান মাস?
আমার অন্য বাংলা ব্লগে প্রকাশিত আমার ভাল লাগা কিছু লেখা এখানে পারাপার করার প্রচেষ্টায় এইটাই প্রথম প্রয়াস।
লেখাটি গত ঈদের আগের দিনে লেখা।
১৩ ই অক্টোবর, ২০০৭ সকাল ৮:৪৫
Thursday, July 24, 2008
এই পথে পথিকের পদার্পন
এই জগতে ইহাই তাহার প্রথম পদার্পন নহে। ইতোপূর্বে নানা রূপে নানা রংএ এরূপ আরও কতিপয় জগতে পথিক পদার্পন করিয়াছিল। কিছুকাল পদব্রজ পালন করিয়া পরবর্তীতে ক্লান্ত পদভারে স্তিমিত হইয়া পড়িয়া থাকিয়াছে।
এই বারও পথিকের পথচলার কি হাল হইবে এখনই বলিবার উপায় নাই। সময়ই উহা বলিয়া দিবে।
তারপরও পথিক এই জগতে পদার্পন করিল, এবং এভাবেই উহা সদর্পে জানাইয়া দিল।
কেউ জানাক না জানাক, পথিক অতঃপর নিজেই নিজেকে একটি পোস্টের মাধ্যমে স্বাগতম জানাইল।